শ্ব অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার মধ্যেও দেশে জুলাইয়ের মতো আগস্ট মাসেও রেমিট্যান্সের গতি অনেক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। করোনার প্রভাব ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পর দেশের অর্থনীতি নিয়েও নানা উদ্বেগের মধ্যেও এক মাসে প্রায় ২০৪ কোটি টাকার মতো রেমিট্যান্স এসেছে। অবশ্য জুলাইয়ে ২০৯ কোটির বেশি টাকা পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস প্রবাসী আয় এসেছে আগস্টে ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের বেশি। সদ্য শেষ হওয়া আগস্ট মাসে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ ( ২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ১৯ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট সূত্রে একথা জানা গেছে।
যা গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। গত বছরের আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮১ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রমতে, আগস্ট মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। চলতি ২০২২-২৩ নতুন অর্থবছরের দুই মাসের (জুলাই-আগস্ট) হিসাবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। এই দুই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৪১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ৩৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার এসেছিল।
এদিকে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীরা ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার (প্রায় ২.১ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন, যা ছিল গত ১৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।
অর্থবছরে রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা-পরবর্তী সময়ে দেশ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ শ্রমিক নতুন করে বিদেশে যাওয়ায় তাদের কাছ থেকে বাড়তি পরিমাণ রেমিট্যান্স পাওয়া যাবে।
এছাড়াও ডলারের দাম বৃদ্ধি ও অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থানের কারণেই প্রবাসী আয় বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও বর্তমানে ডলারের দাম অনেকটা কমে এসেছে।
রেমিট্যান্স বাড়ার পেছনে কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে ডলারের দর বেশ খানিকটা বেড়েছে। প্রণোদনার পরিমাণ দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। এসব কারণে প্রবাসীরা এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে কারণেই বাড়ছে রেমিট্যান্স।
তিনি বলেন, এই সময়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির খুবই দরকার ছিল। নানা পদক্ষেপের কারণে আমদানি ব্যয় কমতে শুরু করেছে। রফতানির পাশাপাশি রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে আশা করছি এখন মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
যাযাদি/ এস